এপ্রিল ফুল (April Fool's Day) নামের উৎপত্তি ও পেছনের ঘটনা
এপ্রিল ফুলের সঠিক উৎস সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা কঠিন, তবে এর পেছনে বেশ কিছু জনপ্রিয় ব্যাখ্যা রয়েছে।
১. ক্যালেন্ডার পরিবর্তন তত্ত্ব
একটি বহুল প্রচলিত ব্যাখ্যা হলো, ১৬৮২ সালে ফ্রান্সের রাজা নবম চার্লস গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে নববর্ষের দিন ১ জানুয়ারি নির্ধারণ করেন। তবে আগের জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে নববর্ষ উদযাপিত হতো ২৫ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত।
অনেক মানুষ তখনও পুরনো পদ্ধতি মেনে ১ এপ্রিলেই নববর্ষ পালন করত। তাদের ‘বোকার মতো’ মনে করা হতো, এবং অন্যরা মজা করে তাদের ঠকাত। এখান থেকেই এপ্রিল ফুলের ধারণা জন্ম নেয়।
২. হেলারিয়া উৎসব (Hilaria Festival, রোমান উৎসব)
প্রাচীন রোমানরা হেলারিয়া (Hilaria) নামে একটি উৎসব পালন করত, যা ২৫ মার্চে অনুষ্ঠিত হতো। এতে মানুষ মিথ্যা গল্প বানিয়ে ও ছদ্মবেশ ধারণ করে অন্যদের বোকা বানাত। অনেকে মনে করেন, এখান থেকেই এপ্রিল ফুলের ধারণা এসেছে।
৩. মাছ ধরা নিয়ে ফরাসি তত্ত্ব (Poisson d'Avril)
ফ্রান্সে এপ্রিলের প্রথম দিকে মাছ ধরা তুলনামূলক সহজ ছিল না। এ সময় অনেকে কাঁচা হাতে মাছ ধরার চেষ্টা করত, এবং অভিজ্ঞ মৎস্যজীবীরা তাদের নিয়ে ঠাট্টা করত। এ কারণেও ‘এপ্রিল ফুল’ বা Poisson d'Avril (এপ্রিলের মাছ) শব্দের উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
৪. ব্রিটিশ গণমাধ্যমের প্রচারণা
১৭০০-এর দশকে ব্রিটেন ও স্কটল্যান্ডে এপ্রিল ফুল ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে গণমাধ্যম বিভিন্ন মিথ্যা খবর প্রকাশ করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো শুরু করে, যা এই দিনটির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।
যদিও এপ্রিল ফুলের প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে মতভেদ রয়েছে, তবে এটি বিশ্বব্যাপী একটি মজার ও হাস্যরসাত্মক দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। অনেক দেশেই এই দিনে মানুষ মজার ছলে একে অপরকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন