সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কারক নির্ণয় ।

                         
                             কারক 
কারক নির্ণয় প্রায় সব শ্রেনিতেই থাকে তাই এটি প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীর শেখা বাধ্যতামূলক । একটু পরিশ্রম করলেই খুব সহজেই তারা এটি করতে পারে। কিন্তু আমি বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রীদের এই কারকেও ভয় পেতে দেখেছি । আমার প্রিয় ছাত্র ছাত্রী, তোমাদের আর কারকে ভয় পাবার দরকার নেই। 
তোমাদের আমি সহাজ সরল পদ্ধতির মাধ্যমে কারক বুঝিয়ে দেবো, যার পর তোমদের আর কখনই কারক ভুল হবেনা। 
আমি একটা কবিতার মাধ্যমে তোমাদের কারক নির্ণয় শিখিয়ে দেব। 

              কারক নির্ণয়ের কবিতা
 কারক নির্ণয় যদি মনে প্রাণে কর 
    তাহলে সবার আগে ক্রিয়াপদ ধর। 
 ক্রিয়াকে প্রশ্ন কর নিম্নরূপ ভাবে 
     ক্রিয়াই বলিয়া দেবে কোন কারক হবে। 
                 কে > কর্তা 
                  কী > কর্ম
              দ্বারা, দিয়া > করণ 
         হইতে , থেকে > অপাদান 
               কোথায় > অধিকরণ 
    শর্ত ত্যাগের দ্বারা নিমিত্ত কারক হয়। 
            সুস্থ্য মনে কর তোমরা কারক নির্ণয়। 

             এবার আসি প্রশ্ন ও উত্তরে

 ১। কারক কাকে বলে? ইহা কত প্রকার ও কি কি?  
কারকঃ ক্রিয়াপদের সঙ্গে বাক্যে অবস্থিত বিশেষ্য, বিশেষণ , সর্বনাম ইত্যাদি পদের সম্পর্ককে কারক বলে। 
প্রকারভেদঃ বাংলা ভাষায় কারক ছয় রকম। যথা- ১। কর্তৃ কারক , ২। কর্ম কারক, ৩। করণ কারক, ৪। নিমিত্ত কারক, ৫। অপাদান কারক, ৬। অধিকরণ কারক
 ২। কর্তৃ কারক কাকে বলে ? উদাহরন দাও । 
উঃ যে পদ বাক্যের ক্রিয়াটি সম্পাদন করে তাকে কর্তৃ কারক বলে। 
উদাহরণঃ রাজু খেলতে গেল।
              বুল্বুলিতে ধান খেয়েছে। 
              রাজা ভাত খায়। 

৩। কর্ম কারক কাকে বলে ? উদাহরণ দাও। 
উঃ বাক্যে কর্তা যে কাজটি করে বা ক্রিয়ার যে বিষয় তাকে কর্ম বলে । আর যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের দ্বারা ক্রিয়ার কর্ম বোঝায় তা কর্মকারক। উদাঃ দিনু বাজনা বাজায়। 
         শুভ ঘুরি ওড়ায় । 
        দাদা ভূগোল পড়ায়।

 ৪। করণকারক কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
 উঃ- কর্তা যার দ্বারা কাজটি সম্পন্ন করে তাকে করণ কারক বলে। 
উদাহরনঃ আলোয় মাঠ ভরে গেছে। 
              সে নৌকায় নদী পার হল। 
            ছুরিতে পেনসিল কাটা হল। 
 ৫। নিমিত্ত কারক কাকে বলে? উদাহরন দাও। 
উঃ- ক্রিয়াকে কে, কী জন্য বা কী নিমিত্ত দিয়ে প্রশ্ন করলে যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ পাওয়া যায় , তাকে নিমিত্ত কারক বলে। 
উদাহরণঃ- জগদীশ্চন্দ্র গবেষণার জন্য অর্থব্যয় করেছিলেন। 
            ত্রাণের জন্য অন্ন ও বস্ত্র দিয়েছে সবাই।                উচ্চশিক্ষায় সে বিদেশে পাড়ি দিল। 
 ৬। অপাদান কারক কাকে বলে? উদাহরন দাও। উঃ- যা থেকে কোনো কিছু হওয়া বা ঘটা বোঝায় তাকে অপাদান এবং যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের দ্বারা এই ঘটা বা হওয়া কাজটি বোঝায় তাকে অপাদান কারক বলে। 
 উদাহরনঃ চোখ দিয়ে জল পড়ছে । 
                 বিপদে মোরে রক্ষা করো । 
                  সে নৌকা থেকে পড়ে গেল। 
 ৭। অধিকরণ কারক কাকে বলে ? উদাহরণ দাও। উঃ ক্রিয়ার আধারকে ( স্থান, কাল, পাত্র )বলা হয় অধিকরণ কারক। 
 উদাহরণঃ গ্রীষ্মকালে আম হয়।
                ছাত্রটি ইংরাজিতে কাঁচা । 
                ট্রেন হাওড়া পৌছাল । 

এতক্ষণ তোমরা যে সমস্ত লেখাগুলো ও উদাহরণ গুলো পড়লে সেগুলো ভালো করে বিশ্লেষণ করে দেখো আমার যে কবিতাটি প্রথমেই দেওয়া আছে সেখান থেকেই সমস্ত উত্তর তোমরা খুঁজে পাবে। আর কোনদিনও কারক করতে গিয়ে তোমাদের অসুবিধায় পড়তে হবেনা। তবে আরও কিছু বিষয় আছে যা না জানলে কারক শেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায় । আমি তা নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করছি ।

 ১। বিভক্তি কাকে বলে ? উদাহরণ দাও। 
উঃ - অর্থবোধক শব্দ সমষ্টি প্রকাশ করতে শব্দের সঙ্গে যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয় , তাকে বিভক্তি বলে। 
 উদাহরনঃ- র, তে , য়ে ,কে ,এ ইত্যাদি।
 ২। সম্বন্ধ পদ কাকে বলে ? উদাহরন দাও। 
 উঃ ক্রিয়া পদের সঙ্গে যে পদের যোগ থাকে না , অথচ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সঙ্গে যোগ থাকে , সেই পদকে সম্বন্ধ পদ বলে। 
 উদাহরনঃ খাঁচার পাখী ছিল খাঁচার । 
               বনের পাখী ছিল বনে । 
              ছেলেদের জন্য লজেন্স এনো । 
৩। সম্বোধন পদ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
 উঃ সম্বোধন বা আহ্বান করে যে পদ ব্যাবহার করা হয় তাই সম্বোধন পদ। 
 উদাহরণঃ অহে! কোথায় চললে ? 
             ওরে বাদল , এদিকে আয়। 
             কাকাবাবু, কি যেন বললে । 
 আশা রাখি এবার তোমরা সকলেই খুব ভালোভাবে কারক নির্ণয় করতে পারবে। 

এছাড়াও যেকোনো সাহায্যের জন্য আমার টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিতে পারো।
 নিচে লিঙ্ক দেওয়া হল----- 
telegram TELEGRAM

 এছাড়াও বিষয়টি আরও ভালোভাবে বুঝতে ও অন্যান্য শিক্ষণীয় ভিডিও দেখতে আমার ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে পারো । 
নিচে লিঙ্ক দেওয়া হল।----
youtube


*****************ধন্যবাদ *******************

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

W.B.B.S.E মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত জ্যামিতিক প্রয়োগের প্রশ্ন

 মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত গুরুত্বপূণ প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হল।

"উদ্বেগ" লেখক: বিমল কর

                            উদ্বেগ   সারাটা দিন আকাশ ময়লা হয়ে ছিল। কখনও আধ-ফোটা রোদ কখনও মরা। মেঘলা। শীত অনেক দূরে চলে গিয়েও মাঘের এই একেবারে শেষে আবার যেন ভাবছিল অল্পের জন্যে আসবে কিনা ; ফেলে যাওয়া কোনো জিনিস নিতে, কোনো ভুলে যাওয়া কথা বলতে মানুষ যেমন করে ফিরে আসে। সকাল থেকেই কুয়াশায় সব অপরিষ্কার থাকল, অনেক বেলায় যখন এক আঁজলা রোদ দিচ্ছিল আকাশ, তখন শীতের স্পর্শ পাওয়া গেল ; তারপর মেঘলা হল। দুপুর বিকেল বলে আলাদা করে কিছু বোঝা গেল না ; এই রকম অপরিষ্কার সারাটা দিন কেটে গেল, সন্ধের দিকে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি পড়ল। শিশির তখন রাস্তায়। গার্লস স্কুলের গলি দিয়ে পথ ছোট করে নেওয়া যেত। সাইকেলটা আজ বারবার ভোগাচ্ছে। চেন খুলে যাচ্ছে। ইচ্ছে ছিল বাজারে গিয়ে মেরামত করিয়ে নেবে। গার্লস স্কুলের গলি না ধরে শিশির কিশোরীলালের। ছিট-কাপড়ের দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়াল একটু মাথা বাঁচিয়ে। আর তখন সেই টুপ-টাপ বৃষ্টির মধ্যে পথ দিয়ে রাম-রাম ধ্বনি দিয়ে আরও একটা শব সৎকারের জন্যে শ্মশানে নিয়ে যাচ্ছিল হিন্দুস্থানী মহল্লার লোকেরা। এই নিয়ে আজ চারটে শব যেতে দেখল শিশির সারা দিনে। তার চোখের বাইরে দিয