সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সমাস কাকে বলে? এটি কত প্রকার ও কী কী? প্রত্যেক প্রকার সমাসের উদাহরণ সহ সংজ্ঞা দাও।

সমাস কী?

দুই বা ততোধিক পদের সংযোগে যদি একটি নতুন পদ গঠিত হয় এবং সেই পদের মধ্যে থাকা অব্যয় বা বিভক্তি লোপ পায়, তখন তাকে সমাস বলে। সমাসের ফলে বাক্য সংক্ষিপ্ত হয় এবং অর্থ গম্ভীর হয়।

সমাসের প্রকারভেদ:

সমাস প্রধানত চার প্রকার
১. দ্বন্দ্ব সমাস
2. তৎপুরুষ সমাস
3. দ্বিগু সমাস
4. বহুব্রীহি সমাস

এছাড়াও অব্যয়ীভাব সমাস এবং কর্মধারয় সমাসও গুরুত্বপূর্ণ।


১. দ্বন্দ্ব সমাস

যে সমাসে দুই বা ততোধিক পদের প্রত্যেকটি সমান গুরুত্ব পায় এবং তাদের অর্থ বজায় থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।

উদাহরণ:

  • পিতা-মাতা (পিতা ও মাতা)
  • রাম-লক্ষ্মণ (রাম এবং লক্ষ্মণ)
  • হরি-হর (হরি ও হর)

২. তৎপুরুষ সমাস

যে সমাসে পূর্বপদ পরপদকে বিশেষণ বা বিশেষ্য রূপে বোঝায় এবং পরপদ প্রধান থাকে, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। এটি আবার কয়েকটি ভাগে বিভক্ত:

(ক) কারক তৎপুরুষ

যে সমাসে কোনো কারকের বিভক্তি লোপ পায়, তাকে কারক তৎপুরুষ বলে।
উদাহরণ:

  • রাজপুত্র (রাজার পুত্র) → ষষ্ঠী তৎপুরুষ
  • অন্নজল (অন্ন ও জল) → দ্বিতীয়া তৎপুরুষ

(খ) উপপদ তৎপুরুষ

যেখানে প্রথম পদ দ্বিতীয় পদের অর্থ ব্যাখ্যা করে এবং সাধারণত ক্রিয়াপদের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
উদাহরণ:

  • সংসারত্যাগী (সংসার ত্যাগ করে যে)
  • জলপান (জল পান করা)

৩. দ্বিগু সমাস

যে সমাসে সংখ্যাসূচক পদ প্রথমে বসে এবং সংখ্যার সাথে সম্পর্কিত কিছু বোঝায়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে।
উদাহরণ:

  • ত্রিলোক (তিনটি লোক বা জগৎ)
  • ষোড়শী (ষোলো বছরের কিশোরী)
  • সপ্তর্ষি (সাত ঋষির দল)

৪. বহুব্রীহি সমাস

যে সমাসে সমস্তপদের অর্থ ভিন্ন হয় এবং তা অন্য কিছুকে বোঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে।
উদাহরণ:

  • দশানন (যার দশটি আনন বা মুখ আছে, অর্থাৎ রাবণ)
  • চতুরঙ্গ (যার চারটি অঙ্গ আছে, অর্থাৎ সেনাবাহিনী)
  • নীলকণ্ঠ (যার গলা নীল, অর্থাৎ শিব)

৫. অব্যয়ীভাব সমাস

যে সমাসে প্রথম পদটি অব্যয় এবং তা পরের পদের অর্থ ব্যাখ্যা করে, তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
উদাহরণ:

  • অতীতকাল (অতীত সময়)
  • সদাসুখী (যে সদা সুখে থাকে)
  • নিশিদিন (রাত-দিন)

৬. কর্মধারয় সমাস

যে সমাসে প্রথম পদ দ্বিতীয় পদের বিশেষণ বা বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে।
উদাহরণ:

  • নীলকমল (নীল রঙের কমল)
  • সদগুরু (সৎ গুরু)
  • সুবর্ণমুদ্রা (সোনা নির্মিত মুদ্রা)

উপসংহার

সমাস বাংলা ব্যাকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি বাক্যকে সংক্ষিপ্ত ও অর্থবহ করে তোলে। বিভিন্ন প্রকার সমাস বিভিন্ন ধরনের বাক্যগঠনে ব্যবহৃত হয়, যা ভাষাকে সুন্দর ও সহজবোধ্য করে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

W.B.B.S.E মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত জ্যামিতিক প্রয়োগের প্রশ্ন

 মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত গুরুত্বপূণ প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হল।

কারক নির্ণয় ।

                                                        কারক   কারক নির্ণয় প্রায় সব শ্রেনিতেই থাকে তাই এটি প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীর শেখা বাধ্যতামূলক । একটু পরিশ্রম করলেই খুব সহজেই তারা এটি করতে পারে। কিন্তু আমি বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রীদের এই কারকেও ভয় পেতে দেখেছি । আমার প্রিয় ছাত্র ছাত্রী, তোমাদের আর কারকে ভয় পাবার দরকার নেই।  তোমাদের আমি সহাজ সরল পদ্ধতির মাধ্যমে কারক বুঝিয়ে দেবো, যার পর তোমদের আর কখনই কারক ভুল হবেনা।  আমি একটা কবিতার মাধ্যমে তোমাদের কারক নির্ণয় শিখিয়ে দেব।                কারক নির্ণয়ের কবিতা  কারক নির্ণয় যদি মনে প্রাণে কর      তাহলে সবার আগে ক্রিয়াপদ ধর।   ক্রিয়াকে প্রশ্ন কর নিম্নরূপ ভাবে       ক্রিয়াই বলিয়া দেবে কোন কারক হবে।                   কে > কর্ত...

VOICE CHANGE

                                VOICE CHANGE   সপ্তমশ্রেনি থেকে দ্বাদশশ্রেনি পর্যন্ত সকল ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজি পরীক্ষায় VOICE CHANGE একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।  যদিও বিষয়টি অত্যন্ত সহজ তবুও অনেক ছাত্রছাত্রী একে একটু ভয় পায়। তাই আমি সেই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের ভয় কাটানোর জন্য খুব সহজ সরল পদ্ধতির সাহায্যে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি এবং আমি নিশ্চিত এই পদ্ধতির সাহায্যে তোমরা খুব ভাল voice change করতে শিখবে                            উদাহরণ                   Active : I eat rice.                  Passive: Rice is eaten by me.  ১। Voice change কাকে বলে ? এটি কত প্রকার ও কি কি ?  উঃ আমরা বাংলায় যাকে বাচ্য বলি তাকেই আমরা ইংরাজিতে voice change বলি।...